Jinn Jati (জ্বিন জাতি) - EDUCATION

Breaking

Around the World

Jinn Jati (জ্বিন জাতি)

জ্বিন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস

জ্বিন সম্প্রদায়ের বিষয়ে হাজারো প্রশ্নের উত্তরমালা

আস্সালামু আলাইকুম রহমাতুল্লাহ

প্রিয় পাঠক/পাঠিকা,

আমরা, মুসলমানরা, 'জ্বিন' এর অস্তিত্বে বিশ্বাসী কারণ, মহাস্রষ্টা আল্লাহ পবিত্র কোরআনের বহু জায়গায় জ্বিনের কথা উল্লেখ করেছেন সুস্পষ্ট ভাষায় প্রিয়নবীজির প্রিয় হাদীসেও জ্বিন-বিষয়ক বহু আলোচনা পাওয়া যায় তাই জ্বিনের অস্তিত্বে বিশ্বাস রাখার বিষয়টি ঈমান-আকীদা অংশ হয়েই দাঁড়ায়

  মূলতঃ অমুসলিম পণ্ডিতদের মধ্যে রয়েছে 'ভূত' নিয়ে অদ্ভুতরকমের বিভ্রান্তি এন্দ্রে মধ্যে একদল পণ্ডিত ভূতের অস্তিত্বে বিশ্বাসী ওরা নিজেদের বিশ্বাসের স্বপক্ষে নানান ধরনের যুক্তি প্রমাণ অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন কিন্তু আরেকদল অমুসলিম পণ্ডিত ওগুলোকে পুরোপুরি নস্যাৎ করে দেন

আসলে উভয় দলই বিভ্রান্ত কেননা 'ভূত' বলে কিছুই নেই আছে 'জ্বিন' জ্বিনদের বিভিন্ন কার্যকলাপ মাঝে-মধ্যে দেখে শুনে কেউ কেউ সেগুলোকেভূতের কারসাজি' বলে মনে করেন এবং ওগুলোর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হাতড়াতে থাকেন 'ভূতে অবিশ্বাসীরা'

 কিন্তু আমরা, যারা জ্বিনের অস্তিত্বে বিশ্বাসী, জ্বিনদের বিষয়ে অনেক কিছুই জানি না আমরা অনেকেই জানি না জ্বিনরা কী খায়, কোথায় থাকে, কীভাবে বংশ বাড়ায়, মরে গেলে ওদের দেহ কোথায় যায় ইত্যাদি-ইত্যাদি তাই, সঙ্গত কারণেই আমাদের মনে জ্বিনদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে অজস্র কৌতূহল দেখা দেয় জানতে ইচ্ছা হয় জ্বিনবিষয়ক নানান খুঁটিনাটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের অনেকেরই এই স্বাভাবিক অনুসন্ধিৎসা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পূরণ হয় না কারণ জ্বিনবিষয়ক নির্ভরযোগ্য বই-পুস্তক যেমন স্বল্প তেমনই দুষ্প্রাপ্য বাংলায় তো ছিলই না

আমাদের ইসলামী জ্ঞানভাণ্ডারের প্রধানতম উৎস আরবীতে জ্বিনবিষয়ক গ্রন্থ লেখা হয়েছে হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি সেগুলির মধ্যে অন্যতম আল্লামা বদরুদ্দীন শিব্বী (রহ্.) (৭২৯ হি.) প্রণীত আকামুল মারজ্বানি ফী আহ্কামিল জ্বান্ন বিষয়বস্তুর বিচারে গ্রন্থটি যথেষ্ট ভালো হলেও সাধারণ পাঠকদের পক্ষে পুরোপুরি উপযোগী নয় তাই এতে প্রয়োজনমতো সংযোজন বিয়োজন পরিবর্তন পরিবর্ধনের পর সাধারণের উপযোগী করে আরেকটি পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত

করেন আরেক বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্ব আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহঃ) (৯১১ হি.) আল্লামা সুয়ূতী (রহঃ) তাঁর ওই পাণ্ডুলিপির নামকরণ করেন লাকতুল মারজ্বানি ফী আহ্কামিল জ্বান্ন এটিকে জ্বিনবিষয়ক বিশ্বকোষও বলা যায় তাই আমরা বাংলা ভাষা-ভাষীদের জন্য এই আকর গ্রন্থটি বেছে নিলাম এবং সাধ্যমতো সহজ সরল সাবলীল অনুবাদের মাধ্যমে জ্বিন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস নামে পেশ করলাম

বাংলার পাঠকদের কথা মাথায় রেখে গ্রন্থটি আগাগোড়া হুবহু অনুবাদ করা হয়নি কোনও কোনও বর্ণনা, একাধিকবার এসে যাওয়ার দরুন, বাদ দেওয়া হয়েছে কোনও কোনও অংশ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা থাকার কারণে একই বিষয়ের বিক্ষিপ্ত বর্ণনাগুলো আনা হয়েছে একই পরিচ্ছেদের অধীনে তাছাড়া পর্ব, পরিচ্ছেদ, অনুচ্ছেদ প্রভৃতি বিন্যাস এবং সেগুলির শিরোনাম উপশিরোনাম প্রভৃতির নামকরণের অধিকাংশ করা হয়েছে নিজেদের তরফ থেকে

গ্রন্থটির অনুবাদে পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম ইমদাদুল্লাহ আনওয়ার সাহেবের উর্দূ তরজমা 'তারীখে জ্বিন্নাত ওয়া শায়াজ্বীন' থেকে যথেষ্ট সাহায্য নেওয়া হয়েছে এবং তাঁর নিজের পক্ষ থেকে সংযোজিত বর্ণনাসূত্রগুলিও এতে ব্যবহার করা হয়েছে আগেই বলা হয়েছে, গ্রন্থকে বলা যায় জ্বিনবিষয়ক বিশ্বকোষ, তাই এর মধ্যে কিছুযঈফ' এবংমাউযূ বর্ণনাও থেকে যাওয়া অসম্ভব নয় রূপক অর্থেও ব্যবহৃত হয়েছে অনেক বর্ণনা সুতরাং আকায়িদ ইবাদাতের ক্ষেত্রে গ্রন্থটিকেপুরোপুরি শরীয়তী গুরুত্ব দেওয়া চলবে না

সাধ্যমতো সাবধানতা সত্ত্বেও, স্বল্প যোগ্যতার কারণে, কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতিও থেকে যেতে পারে কোনও সহৃদয় পাঠকের  নযরে তেমন কিছু ধরা পড়লে জানিয়ে দেওয়ার অনুরোধ রাখলাম

আল্লাহ আমাদের সকলের মেহনত কবূল করুন

                    *****************************

No comments:

Post a Comment