১। অন্যের বাড়ি আর নিজের বাড়ির মধ্যে পার্থক্য কী?
নিজের বাড়িতে ইচ্ছেমত কাজ করা যায়। কিন্তু অন্যের বাড়িতে জিজ্ঞাসা করে কাজ করতে হয়।
২। কারো বাড়িতে বেড়াতে গেলে কোথায় বসতে হবে?
বসার স্থানগুলোতে বসতে হবে। বিছানায় বসা ঠিক না। তবে তারা বসতে বললে বিছানাতে বসা যাবে।
৩। কারো বাড়িতে গেলে কোন ঘরে বসব?
কারো বাড়িতে বেড়াতে গেলে বাইরের ঘরে বসব। নিজে ভেতরের ঘরে যাব না। তবে তারা যেতে বললে ভেতরের ঘরে যাব।
8। আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে যেয়ে বেশি দিন থাকা কি ঠিক?
আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে যেয়ে বেশি দিন থাকা ঠিক না। আত্মীয় বাড়িতে বেশি দিন থাকা কেউ পছন্দ করে না।
৫। অন্যের বাড়িতে যেয়ে কেমনভাবে থাকতে হয়?
তারা যা বলবে তা শোনব। কোন ব্যাপারে বাহানা করব না। কোন কাজ করার আগে জিজ্ঞাসা করে কাজ করব।
৬। কারো বাড়িতে গেলে প্রথমে কী করব?
কলিংবেল দেব বা বাইরের থেকে ডাকব। বারবার কলিংবেল দেব না বা গেটে শব্দ করব না।
৭। অন্যের বাড়িতে কী বলে ঢুকতে হয়?
প্রথমে সালাম/নমস্কার দিতে হবে। তারপর ভেতরে ঢোকার অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হবে।
৮। ঘরের সামনে স্যান্ডেল রাখা আছে, কীভাবে ঢুকব?
ঘরের সামনে বা সিঁড়িতে স্যান্ডেল দেয়ার অর্থ ঐ খানে স্যান্ডেল খুলে ভেতরে ঢুকতে হবে।
৯। ঘরের সামনে পাপোস দেয়া থাকলে কোথায় জুতা-স্যান্ডেল খুলব?
পাপোসের সামনে জুতা-স্যান্ডেল খুলে পাপোসে পা মুছে ভেতরে ঢুকতে হবে। পাপোসের উপর স্যান্ডেল তোলা ঠিক না। তবে অফিসে অনেক সময় বারান্দায় বা সিঁড়িতে পাপোস দেয়া থাকে যা জুতার তলা মোছার জন্য, জুতা খোলার জন্য না। সেখানে জুতা খুলতে হবে না।
১০। অন্যের ঘরে জুতা পায়ে যাওয়া যাবে কি?
দেখতে হবে অন্যরা যদি জুতা পায়ে ভেতরে যায় তবে আমিও যাব তা না হলে যাব না। প্রয়োজনে জিজ্ঞাসা করতে হবে।
১১। কারো বাড়িতে বেড়াতে গেলে পরা কাপড় কী করব?
যদি নিকটে কোথাও যায় তবে কোন সমস্যা হয় না। তবে দূরের পথ হলে গাড়িতে করে যেতে হয়। কাপড় ময়লা হয়। এই ময়লা কাপড় পরে ভেতরে বা বিছানায় যাওয়া ঠিক না। প্রথমে ময়লা কাপড় পাল্টাতে হবে ও ময়লা কাপড়গুলো আলাদা করে রাখতে হবে। তারপর হাত-মুখ ধুয়ে ভেতরে যেতে হবে। ব্যাগটি কখনও বিছানায় রাখব না। ময়লা ব্যাগ দূরে বা মেঝেতে রাখব। কাপড়, ব্যাগ এসব কোথায় রাখব তা জিজ্ঞাসা করব।
১২। কারো বাড়িতে বেড়াতে গেলে তারা জিজ্ঞাসা করল ভাল আছ? কী বলবে?
বলব ভাল আছি। আপনারা কেমন আছেন? কিন্তু আমরা অনেক সময় বলি, " ভাল না থাকলে আসলাম কীভাবে? অথবা কেমন আছি দেখতে পাচ্ছেন না?" এমনভাবে কথা বলা ঠিক না।
১৩। সব সময় অন্যের বাড়ির দরজা বা গেট খুলতে বাধ্য করা কি ঠিক?
যে কাজে এসেছি তা করার জন্য যদি দরজা না খুললে চলে তবে দরজা খুলতে বলা ঠিক না। যেমন- একটি খবর দিতে এসেছি, এমন অবস্থায় দরজা খুলতে বলা ঠিক না। কোন কথা বলার প্রয়োজন থাকলে তা যদি গেট না খুলে বলা যায় তবে গেট খুলতে বলা ঠিক না।
১৪। কারো বাড়িতে বেড়াতে যাবার পূর্বে খবর দিয়ে যাওয়া কি উত্তম?
যদি সম্ভব হয় তবে বেড়াতে যাবার পূর্বে খবর দিয়ে যাওয়া উত্তম। বাড়ির লোকজন প্রস্তুত থাকে। এমনও হতে পারে যার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি সে অন্য কোথাও চলে গেল। এ জন্য পূর্বে খবর দিয়ে গেলে সমস্যা কম হয়।
১৫। কারো বাড়িতে গেলে বাইরের থেকে কীভাবে কথা বলতে হয়?
কারো বাড়িতে বেড়াতে গেলে আমরা কলিংবেল বাজাই অথবা বাইরের থেকে ডাকাডাকি করি। যদি ভেতর থেকে পরিচয় জানতে চায় তবে অনেক সময় আমরা বলি "আমি" অথবা "মানুষ" এসব বলব না। নাম, পরিচয়, কী কাজে এসেছি, কার কাছে এসেছি এসবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিতে হবে।
১৬। বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গেলে, বন্ধু বাড়িতে নেই কী করবে?
বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গেলে বন্ধু বাড়িতে না থাকলে ফিরে আসা উত্তম। তবে খুব ঘনিষ্ঠ হলে এবং বন্ধুর ভাই, বাবা এমন কেউ বাড়িতে থাকলে বসা যেতে পারে।
১৭। আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গেলে কি নিজের ব্যবহার্য জিনিস নিয়ে যেতে হয়?
আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গেলে নিজের ব্যবহার্য জিনিস যেমন লুঙ্গি, তোয়ালে, টুথব্রাশ ইত্যাদি নিয়ে যাওয়া উত্তম।
১৮। কলিংবেল কি ঘন ঘন বাজানো ঠিক?
একবার কলিংবেল বাজানোর পর অপেক্ষা করতে হবে। বাড়ির লোক হয়ত কোন কাজ করছে। অনেক দেরি দেখলে আবার কলিংবেল বাজানো যাবে। ঘনঘন কলিংবেল বাজানো বা গেটে শব্দ করা ঠিক না।
১৯। কারো বাড়িতে বেড়াতে গেলে তোমার একার জন্য নাস্তা দিল কী করবে?
বাড়ির অন্যদের বা অন্তত একজনকে আমার সাথে খেতে বলব। তাদের কেউ রাজি না হলে নিজে একা খাব কারণ এমনও হতে পারে বেশি লোকের দেয়ার মত খাবার নেই। নাস্তা খাওয়ার পর প্রিচে হাত ধোয়া ঠিক না।
২০। সব খাবার খাওয়া কি ঠিক না কিছু খাবার পাত্রে রাখা যাবে?
সব খাবার খেতে হবে। একজনের বাদ দেয়া খাবার অন্য কেউ খায় না। এ কারণে খাবার খাওয়ার পূর্বে প্রয়োজনে পরিস্কার পাত্রে কিছুটা খাবার চামচ দিয়ে উঠায়ে রাখা ভাল। অন্যের বাড়িতে এমন হলে যদি বাড়িওয়ালা এসময় লোকটিকে সাহায্য করে তবে খুব ভাল হয়। বাড়িওয়ালা এমন করলে বাড়িওয়ালার পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি মেহমানের আস্থা বৃদ্ধি পায়। শুকনো খাবার যেমন মুড়ি পরিবেশনের সময় চামচ ব্যবহার করতে হয়। যেসব খাবার হাত দিয়ে তৈরি করতে হয় তা তৈরির পূর্বে দু হাত ভালভাবে ধুতে হবে। আর পরিবেশনের সময় হাতের কোন স্পর্শ লাগানো যাবে না।
২১। কোন খাবারের প্রতি অনীহা থাকা কি যুক্তিযুক্ত কাজ?
স্বাস্থ্যসম্মত এবং হালাল সব ধরণের খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এক এক প্রকার খাবারের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা এক এক প্রকার গুণাগুণ দিয়েছে। কিছু কিছু খাবার আছে যা সব সময় খাওয়া হয় না। যেমন- ভাত আমরা সব সময় খাই কিন্তু তেতুল, ডাব, পেয়ারা, ময়দা ইত্যাদি সব সময় খাওয়া হয় না। যেসব খাবার সব সময় খাওয়া হয় না তা খাওয়ার জন্য বেশি আগ্রহ থাকা দরকার। মাঝে মাঝে যেন ঐ সব খাবার খাওয়া হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঋতুগত ফল, সবজি ইত্যাদি খেতে হবে।
২২। খাবার খাওয়ার প্রতি কেমন গুরুত্ব দেয়া দরকার?
খাবার মানুষের জীবনীশক্তি বৃদ্ধি করে। খাওয়ার প্রতি খুবই গুরুত্ব দেয়া উচিত। যেসব খাবার ক্ষুধা নষ্ট করে সেসব খাবার খাওয়া ঠিক না। ভোর হবার দু তিন ঘন্টার বেশি পেট খালি রাখা ঠিক না। সকালে না খেয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাবে না। খাবার খেতে ইচ্ছে না হলেও অনেক সময় ধরে ভালভাবে খাওয়া দরকার। ঠিকমত না খেলে শরীর ঠিক থাকে না। খাবার না খাওয়ার ফলে একবার শরীর খারাপ হলে তা ঠিক করা খুব কষ্টকর। খাওয়ার ব্যাপারটি কিছুটা স্বার্থপরের মত করতে হয়। বেশি নেব না, কখনও কখনও নিজের ভাগের থেকে অন্যকে দেব তবে নিজের অংশটা যেন খাওয়া হয়। খাবার না খেলে খাওয়ার প্রতি অনীহা বৃদ্ধি পায়। তাড়াতাড়ি ঘুমোতে গেলে, ভোরে ঘুম থেকে উঠলে এবং কাজ করলে ক্ষুধা বাড়ে। সুস্থ শরীর মানুষের বড় সম্পদ। আজকাল বাচ্চাদের ও মেয়েদের খাওয়ার ব্যাপারে বেশি অনীহা দেখা যায়। মেয়েদের খাবার খাওয়ার প্রতি অনীহা এবং স্বাস্থ্য অসচেতনতা পরবর্তীতে সাংসারিক জীবনে অনেক অশান্তির কারণ হয়। শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করে ক্ষুধা বাড়ানো দরকার। মোটা চিকন বড় বিষয় না সুস্থ মানুষই বড় বিষয়। শরীরে কোন উপাদানের ঘাটতি হলে রোগ হয়। এক এক এক খাবারে এক গুণ আছে যা আমরা জানি না। এজন্য সব হালাল খাবার খাওয়া দরকার।
২৩। খাবারের মধ্যে ময়লা পেলে কী করব?
ময়লা ফেলে খাবার খাব অথবা খাবার বদলায়ে খাব। এমনকি না খেয়ে উঠে যাব তবু টু শব্দ করা বা রাগ করা ঠিক না। পাশের লোকদের বুঝতে দেব না। তবে এমন কোন ঘটনা যদি ঘটে যে ঐ খাবার খেলে অন্যদের সমস্যা হতে পারে তবে সেটা বলা উচিত।
২৪। কেউ কিছু খেতে না চাইলে তাকে কি বাধ্য করা ঠিক হয়?
কাউকে কিছু খেতে দিলে তাকে অবশ্যই খাওয়ার কথা বলতে হবে। খেতে না চাইলে অনুরোধ করব। তবে তারপরও যদি সে খেতে না চায় তবে বাধ্য করা ঠিক না। তার হয়ত খাবারটা পছন্দ হচ্ছে না, এখন খেতে ইচ্ছে হচ্ছে না বা অন্য কোন কারণ থাকতে পারে তাই জোর করা ঠিক না।
২৫। চা-পান কি যুক্তি সম্মত?
চা-পানকে আমরা নেশা হিসাবে ধরতে পারি না। এটা সামাজিক রীতিনীতির অংশবিশেষ। যদিও আমাদের দেশে বর্তমানে চা-পান অনেকটা কমে গেছে। চা-পান অভ্যাসে পরিণত করা যাবে না। অনেক লোক আছে যাদের চা-পান না করলে শরীর ভাল লাগে না, কাজ করতে পারে না, মাথা স্বাভাবিক হয় না ইত্যাদি এগুলো ঠিক না। এমনও দেখা যায় বাস ষ্ট্যান্ডে চা-পান করতে যেয়ে গাড়ি ফেল করে। কারো বাড়িতে গেলে তাদের চা-পানের ব্যবস্থা না থাকলে চা-পানকারীকে নিয়ে বাড়িওয়ালা বিব্রত অবস্থায় পড়ে। একসাথে অনেকের চা তৈরি করার সময় কারো কম চিনি, কারো কম লিকার এসব মিলে চা তৈরী করা খুবই সমস্যা। আর চা-পান করলে নিজে তৈরি করে পান করা ভাল।
চা, ভাত-মাংসের মত মৌলিক খাবার না। চা পানের অভ্যাস হলে লোকেরা বিশেষ করে ছেলেরা দোকানে যেয়ে চা-পান করে। সেখান থেকে সিগারেট বা অন্য কোন নেশা দ্রব্য সেবনে অভ্যস্থ হবার ভয় থাকে। তবে এমন অবস্থা হতে পারে কোথাও বেড়াতে গেলে তারা শুধু চা দিয়ে আপ্যায়ন করল অথবা চা-পান করব না এটা বলা সমস্যা। সেখানে একটু ঠান্ডা করে চা-পান করা উত্তম কাজ।
২৬। পাঁচ বন্ধু মিলে পাঁচটি ফল কিনলে ছোটটা বা খারাপটা কে নেবে?
ছোটটা বা খারাপটা আমি নেব অথবা সকলে ভাগ করে খাব। তবে আমাদের মধ্যে আত্মীয় বা মুরব্বি বা ছোট কেউ থাকলে তাকে সবচেয়ে ভালটা দেব।
২৭। একটি বাড়িতে গেলে তোমাকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করল না বা আদর-যত্ন করল না, কী করবে?
বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নেবার চেষ্টা করব। স্বাভাবিকভাবে চলে আসব। হয়ত তাদের বাড়িতে আর যাব না কিন্তু কোন ঝগড়াঝাটি করব না।
২৮। কেমনভাবে খাবার খেতে হবে?
খাবার ভালভাবে মেখে নিতে হবে। ভাত মাখার কাজটি শুধু আঙ্গুলের সাহায্যে করতে হবে। মুখে দেয়ার সময় মুখ খুব বড় করে হা করা যাবে না এবং জিহবা বের করা যাবে না। মুখ প্লেটের উপরে নিয়ে অল্প করে খাবার মুখে দিতে হবে। তারপর মুখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে চিবোতে হবে যেন শব্দ না হয়। হাত দিয়ে খাবার প্লেটে তুলে নেয়া যাবে না। চামচ দিয়ে প্লেটে খাবার তুলে নিতে হবে। চামচের স্পর্শ যেন প্লেটের খাবারে বা প্লেটে না লাগে। গামলায় যে চামচ দেয়া থাকে তা দিয়ে খাবার তুলে নেব। নিজের চামচ দিয়ে খাবার তুলে নেব না। অন্যের অনুমতি না নিয়ে নিজের প্লেটের খাবার অন্যকে দেয়া ঠিক না। অন্যকে দিতে হলে খাওয়া শুরু করার পূর্বে চামচ দিয়ে উঠায়ে দিতে হবে অথবা যাকে দেব তাকে খাবার উঠায়ে নিতে বলতে হবে। সকলকে খাবার দেয়ার পর একত্রে খাওয়া শুরু করতে হবে এবং একত্রে খাওয়া শেষ করার চেষ্টা করতে হবে। আগে আগে খাওয়া শেষ হলে পাশের লোকের জন্য বসে থাকা ভাল। মাছের কাটা বা মাংসের হাড় মুখ থেকে বের করার সময় ডান হাত ব্যবহার করতে হবে। খাবারের যেসব অংশ খাওয়া যায় তা না ফেলা ভাল। যেমন- আপেলের খোসা, কমলার ভেতরের অংশের খোসা, বেগুণের খোসা, পটলের বিচি, এসব বৌনপ্লেটে না ফেলা ভাল। এগুলো আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তাছাড়া এগুলো অন্যের ঘৃণার কারণ হতে পারে। সম্ভব হলে খাওয়ার সময় পৃথক পৃথক বৌনপ্লেট ব্যবহার করা ভাল।
কোন অনুষ্ঠানে গেলে প্লেট, গ্লাস, চামচ ইত্যাদি সাজানো থাকে। প্লেট, গ্লাস, চামচ যদি সোজা করা থাকে অথবা গ্লাসে টিস্যুপেপার দেয়া থাকে তবে বোঝা যায় এগুলো কেউ ব্যবহার করে নি। আর নিজে খাবার পর প্লেট, গ্লাস, চামচ যেভাবে ছিল তা অন্যভাবে রাখতে হবে। গ্লাস ব্যবহার করলে টিস্যুপেপার উঠায়ে রাখতে হবে। যেন অন্য লোকে বুঝতে পারে এগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।
২৯। ধূমপান করা কি ঠিক কাজ?
ধূমপান বা যে কোন ধরণের নেশা করা ঠিক না। কোন কিছু অভ্যাস করা ঠিক না। একজন ধূম পানকারী যেমন নিজের ক্ষতি করে তেমনী অন্যেরও ক্ষতি করে। ফলে ধূমপায়ী অবশ্যই অসচেতন ব্যক্তি। বড়দের থেকে মূলত ছোটরা ধূমপান করতে শেখে। এজন্য বড়দের উচিত ধূমপান বা যে কোন নেশা পরিত্যাগ করা। বন্ধুমহলে কোন কোন সময় এমন অবস্থা হয় যে ধূমপান বা এমন কাজ না করলে বন্ধুদের সাথে চলা যাচ্ছে না। এমন হলে ঐ সঙ্গ ত্যাগ করা ভাল। একজনের ধূমপান করা দেখে যদি আরও পাঁচজন ধূমপানে অভ্যস্ত হয় তবে সে দায়ভার কে বহন করবে? একজন ধূমপায়ী যদি মাস্ক পরে বাইরে যায় তবে বিষয়টা কেমন হয়?
৩০। পান খাওয়াতে কী সমস্যা হয়?
পান খাওয়ার ব্যাপারে ডাক্তার নিষেধ করে থাকেন। ভাত খাওয়ার পর সমস্যা হলে পান খেলে উপকার পাওয়া যায়। আমাদের সামাজিক প্রথার মধ্যে পান খাওয়া একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। কিন্তু অভ্যাসে পরিণত করা ঠিক না। একজন পান খেলে তার সৌন্দর্য নষ্ট হয়। যে লোক পান খায় তার দ্বারা অন্য লোকের সমস্যা হয়।
৩১। অন্যায় সহ্য করা কি ঠিক কাজ?
অন্যায় সহ্য করা ঠিক না। তবে অন্যায়ের বিরোধিতা করতে যেয়ে যেন নিজেরা অন্যায় না করি সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক বন্ধুকে বা সহ কর্মীকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে বা দুর্ঘটনা হলে শুরু হল গাড়ি অবরোধ, গাড়ি ভাংচুর ইত্যাদি। এতে যে কত লোকের প্রতি অবিচার করা হল তা হিসাব করা কঠিন। আর এতে কত গুনাহ হয় তার হিসাব আমরা করি না। পরকালে ঐ সব লোকের কাছে দায়ী থাকতে হবে।
৩২। একটি খারাপ কাজের ফল কতদূর যায়?
একটি খারাপ কাজ করলে বা অন্যায় করলে আমরা শুধু ঐ কাজের জন্য অনুতপ্ত হই। নিজেরা ভুল করা থেকে বিরত থাকি। কিন্তু ঐ কাজটা অনেকে দেখতে পায় এবং অমন অন্যায় করতে শেখে। এসব অন্যায়ের ফল অন্যায়কারীসহ প্রথম ব্যক্তিকে বহন করতে হয়। কিন্তু আমরা শুধু নিজের ভুল টা দেখি। এটা যে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে যায় এবং অনেকে তার থেকে অন্যায় করতে শেখে তা বুঝতে পারি না।
৩৩। পাঁচটি চেয়ার আছে, তোমরা ছ জন যার মধ্যে একজন মুরব্বি বা আত্মীয় আছে কীভাবে বসবে?
মুরব্বি বা আত্মীয়কে প্রথমে বসতে দেব। তারপর অন্য সকলকে বসতে দিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থাকব অথবা ভাগাভাগি করে বসব।
৩৪। মানুষকে ভালবাসলে কী করতে হয়?
তার উপকার করতে হয়। তাকে উপহার দিতে হয়।
৩৫। গুরুজনের সাথে কি করমর্দন করা যায়?
গুরুজনের সাথে করমর্দন করা ঠিক না। তবে গুরুজন ইচ্ছে প্রকাশ করলে তা করা যায়। গুরুজনকে সালাম/নমস্কার দিতে হয়।
৩৬। শিশু ও বড়দের মধ্যে কে অগ্রাধিকার পাবে?
শিশুরা অগ্রাধিকার পাবে।
৩৭। পুরুষ-মহিলার মধ্যে কে অগ্রাধিকার পাবে?
মহিলারা অগ্রাধিকার পাবে।
৩৮। ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে কে অগ্রাধিকার পাবে?
শিক্ষক অগ্রাধিকার পাবে?
৩৯। ভাল কাজ করলে তাকে পুরস্কৃত করা হয় কেন?
অন্য লোক তা দেখে যেন ভাল কাজে উৎসাহ পায়।
৪০। খারাপ কাজে শাস্তি দেয়া হয় কেন?
অন্য লোক খারাপ কাজ করতে যেন ভয় পায়। খারাপ কাজের জন্য মানুষকে অনেক শাস্তি এমনকি মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।
৪১। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা কেমন কাজ?
নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা উত্তম কাজ। নিজের রাগ, আবেগ, আনন্দ, সব নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকা দরকার।
৪২। বন্ধুর সাথে অন্য কোন লোক থাকলে তখন বন্ধুর সাথে কেমন ব্যবহার করব?
কোন বন্ধু বা পরিচিত বড় ছোট যেই হোক না কেন তার সাথে যদি অন্য কোন লোক থাকে তখন বন্ধুটির সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। ঐ তৃতীয় ব্যক্তির নিকট যেন বন্ধুটির ভাবমূর্তি ভাল হয় সেটা বিবেচেনা করে কথা বলতে হবে।
৪৩। ঠিকানা সাথে থাকলে কী সুবিধে?
বাইরে গেলে পকেটে, মানি ব্যাগে, বা কাপড়ের ব্যাগে এবং অন্য কোন জিনিস থাকলে তাতে ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি লেখা ভাল। বই-খাতা এসবে নাম-ঠিকানা লেখা ভাল। যদি হারিয়ে যায় তবে যে পাবে ফেরত দিতে তার যেন কষ্ট না হয়।
৪৪। রাস্তার পাশে প্রসাব করা কি ঠিক?
রাস্তার পাশে প্রসাব করা ঠিক না। আমাদের দেশে রাস্তার পাশে, মসজিদে বা মার্কেটের মধ্যে, বাসষ্ট্যান্ডে, প্রসাব-পায়খানা করার ব্যবস্থা অধিকাংশ ক্ষেত্রে থাকে। এগুলো আরো বেশি করা দরকার।
৪৫। কারো অনুপস্থিতিতে তাকে মন্দ বলা কি ঠিক?
লোকের পেছনে তাকে মন্দ বলা বা গীবত করা ঠিক না। এটা মহাপাপ কিন্তু সব সময় লোকের মন্দ বললেই গীবত হয় না। যেমন- পুত্রকে শিক্ষা দেবার উদ্দেশ্যে পিতার কাছে পুত্রের দোষের কথা বলা, কাউকে মন্দ লোক থেকে সাবধান হতে বলার জন্য বা যারা প্রকাশ্যে পাপ করে, নামায পড়ে না, মদ- গাজা সুদ খায়, বেহায়া, স্বৈরশাসক তাদের মন্দ বলা যায়। কারণ এতে গীবত হয় না। কোন লোক সম্পর্কে অন্যদের সতর্ক করা ভাল। বিচারকের নিকট সত্য কথা বলা গীবত না। মন্দ বলতে হলে সরাসরি নাম না বলা ভাল।
৪৬। শিক্ষিত লোক কি বেশি লোভী হবেন?
শিক্ষিত লোক অনেক কিছু জানেন, বোঝেন। তিনি এটাও জানেন মানুষ চিরদিন বাঁচে না। ধন-সম্পদ বেশি করলে তার সুফল-কুফল তিনি বোঝবেন। প্রকৃত শিক্ষিত লোক বাস্তবতা বোঝবেন তিনি বেশি লোভী হবেন না।
৪৭। রাস্তায় গল্প করা, সভা করা এসব কি ঠিক?
রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বললে লোকের চলাচলে সমস্যা হয়। অনেক সময় মুরব্বি লোকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলেন বা রাস্তার পাশে সভা করেন। এসব ঠিক না। রাস্তা থেকে দূরে এমন স্থানে দাঁড়াতে হবে বা সভা করতে হবে যেন রাস্তা দিয়ে লোকজনের বা যানবাহন যাতায়াত করতে সমস্যা না হয়। কোন গাছের নিচে বা বাড়ির আঙিনাতে রাস্তা থেকে দূরে এসব কাজ করা উত্তম।
৪৮। রাস্তার পাশে আড্ডা দেয়া কি ঠিক?
কোন কোন সময় দেখা যায় ছেলেরা দল ধরে রাস্তার পাশে বা কোন দোকানে আড্ডা দেয়। আড্ডা দেয়াটা খারাপ না। এলাকার ছেলেরা এক এলাকার মধ্যে আড্ডা দেবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের আচরণ এমন হবে যেন অন্যরা বুঝতে পারে তারা এ এলাকার সন্তান, কারো ছোট ভাই কারো বড় ভাই। তাদের দ্বারা এলাকার মঙ্গল ছাড়া ক্ষতি হবে না।
কিন্তু তারা যদি এলাকায় বিশৃংখলা করে, এলাকার মেয়ে যারা তাদেরই বোন-তাদের উত্যক্ত করে তবে তার পরিণাম খুব ভয়াবহ। যদি তাদের জন্য এলাকার কোন মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয় বা এমনও হতে পারে কোন মেয়ে তার মায়ের ঔষধ আনতেও বাইরে যেতে পারে না, এলাকায় মারামারি হয় তবে এ সব দায়-দায়িত্ব কি ছেলেগুলোকে বহন করতে হবে না?
৪৯। কোন মানুষকে কি ছোট করে দেখা যায়?
পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষের প্রয়োজন আছে। প্রত্যেকটা কাজের মূল্য আছে। কে কোন কাজ করে সেটা বড় বিষয় না, নিজ দায়িত্ব কর্তব্য সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করলে সকল পেশার লোক সমান মূল্যবান।
৫০। কেউ কিছু বললে তা শুনতে হয়, কারণ কী?
কেউ কোন কথা বললে তা শুনতে হয়। যেমন একটি লোক দাঁড়াতে বলল বা এখান থেকে চলে যেতে বলল, কিন্তু কি জন্য বলছে তা হয়ত তার পক্ষে পরিস্কার করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তেমনভাবে কোন বিষয় আলোচনা করতে নিষেধ করলে আলোচনা বন্ধ করে দেয়া ভাল।
৫১। কোন ব্যক্তি তোমার সাথে খারাপ আচরণ করল, কী করবে?
কোন ব্যক্তি যদি আমার সাথে খারাপ আচরণ করে বা অন্যায় করে তবে চুপ করে সহ্য করা উত্তম। ঝগড়া করলে শত্রুতা বৃদ্ধি পায়। চুপ করে থাকলে ঐ ব্যক্তি এক সময় নিজের ভুল বুঝতে পারবে। তার খারাপ আচরণের কারণে আমি যে তার সাথে খারাপ আচরণ করি নি তার জন্য সে আমার প্রতি খুশি হবে। নিজে অনুশোচনা করবে। সবশেষে সে আমার একটি ভাল বন্ধু হয়ে যাবে। ধৈর্যশীলকে সৃষ্টিকর্তা পছন্দ করেন।
৫২। একটি লোকের কাজ তোমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে, কী করবে?
সব মানুষই ভুল করে। একটি কাজ দিয়ে মানুষকে বিচার করা যায় না। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় মানুষ ভুল করতে পারে। যে কারণে আমি কষ্ট পেয়েছি সে ঘটনার ফলে লোকটি হয়ত নিজেও পরে কষ্ট পেয়েছে। অনুশোচনা করেছে। এজন্য অতীত ভুলে সামনের দিকে একত্রে চলা মানুষের কর্তব্য। তবে ঐ লোক যদি অনুশোচনা করে সেক্ষেত্রে তার উচিত প্রসঙ্গটা নিয়ে একদিন কথা বলা। আর সে না করলে নিজেও ভাল পরিবেশে কথাটা তুলে সমাধান করে নেয়া যায়। মনে কষ্ট থাকে না।
৫৩। ভাল হতে গেলে কী করতে হয়?
ভাল হতে গেলে প্রথম থেকে ভাল হবার চেষ্টা করতে হবে। সততা, ন্যায়পরায়ণতা, কর্তব্যমুখী, সুন্দর ব্যবহার ইত্যাদি প্রথম থেকেই চেষ্টা করতে হবে। নিজের লোক থেকে অন্যরা জানবে। একবার খারাপ বলে পরিচিত হলে তা থেকে ভাল হওয়া খুবই কষ্টকর। নববধূ, নতুন জামাই ও নতুন কর্মীর ক্ষেত্রে এটা খুবই প্রযোজ্য।
৫৪।ভাল হওয়া ও খারাপ হওয়া-এর মধ্যে কোনটা সহজ?
খারাপ হওয়া খুবই সহজ। যে কোন মুহূর্তে মানুষ খারাপ হতে পারে। কিন্তু ভাল হওয়া একটি সাধনা। অনেকদিন চেষ্টা করলে এ ফল পাওয়া যায়।
৫৫। নিজের কথা বা অন্যের কথা বাড়িয়ে বলা কি ঠিক হয়?
কোন কিছু বাড়িয়ে বলা ঠিক না। মানুষের দোষগুলো ঢেকে গুণগুলো প্রকাশ করা ভাল তবে বাড়িয়ে বলা ভাল না। আমার রোল পাঁচ বললাম রোল চার। একজন ডিগ্রি পাস লোককে পরিচয় করানোর সময় বলা হলো মাস্টার্স পাস। এতে ঐ সময় লোকটি লজ্জা পায় এবং যার সাথে পরিচয় করানো হলো পরে তার কাছে যেতে লজ্জা বোধ করে। নানাবিধ সমস্যা হয়।
৫৬। তুমি অসুস্থ, কেউ জিজ্ঞাসা করল কেমন আছ? কী বলবে?
প্রথমে বলব ভাল আছি। তারপর প্রশ্নকারীর ভালমন্দ জিজ্ঞাসা করব। সব শেষে নিজের অসুস্থতার কথা বলব।
৫৭। নিজের সমস্যার কথা অন্যকে জানানো কি ঠিক হয়?
নিজের সমস্যার সমাধান যথাসম্ভব নিজেই করা উত্তম। তবে একান্ত প্রয়োজন হলে অন্যের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
৫৮। কোন কাজ করার ব্যাপারে কাউকে বাধ্য করা কি ঠিক হয়?
কোন কাজ করার ব্যাপারে কাউকে বাধ্য করা ঠিক না। কোন কাজ করতে বললে যদি কেউ বারবার অপরাগতা প্রকাশ করে তবে তাকে বাধ্য করা ঠিক না। হয়ত কোন সমস্যা আছে যা সে বলতে পারছে না।
৫৯। পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কাজ করা কি ঠিক?
স্কুল, কলেজ, বাড়ি, বাজার, কর্মস্থল, সমাজ ইত্যাদি যেখানেই থাকি না কেন পরিবেশ নষ্টকারী কোন কাজ করা ঠিক না।
৬০। হাতের নখ বড় রাখলে কী সমস্যা হয়?
হাতের নখ বড় রাখলে তাতে ময়লা জমে। আঘাত লাগলে নখ উল্টে রক্তপাত হতে পারে। খাবার তৈরি বা খাবার পরিবেশনের সময় দুই হাত ব্যবহার করা হয়। এজন্য যাদের হাতের নখ বড় আছে তাদের তৈরি খাবার বা তাদের পরিবেশন করা খাবার খেতে অন্য লোকের ঘৃণা লাগতে পারে। নখ বড় রাখা অনেকে সুদৃষ্টিতে দেখে না। এটা কখনও সৌন্দর্যের অংশ হতে পারে না।
৬১। দাঁত মাজার সময় কোন দিকে খেয়াল রাখতে হয়?
সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত মাজা একটি বিশেষ কাজ। প্রথমে কুলি করতে হবে ও ব্রাশ পানিতে ভিজিয়ে টুথপেষ্ট বা পাউডার বা কোন গাছের ডাল-পালা দিয়ে দাঁতব্রাশ করতে হবে। এমনভাবে দাঁতব্রাশ করতে হবে যেন বাইরের ও ভেতরের দাঁত ভালভাবে পরিস্কার হয়। নিচের পাটির দাঁত উপরের দিকে এবং উপরের পাটির দাঁত নিচের দিকে ব্রাশ করতে হয়। ব্রাশ করার সময় থুথু এমন স্থানে ফেলতে হবে যেন কারো চোখে না পড়ে। দাঁতব্রাশ করার সময় জিহবা পরিস্কার করতে হয়। দাঁতব্রাশ করার কাজটি লোকের সামনে করা ঠিক না। দাঁতব্রাশ করার পর ভালভাবে মুখ-চোখ, হাত-পা ধোয়ার পূর্বে কারো সাথে সাক্ষাৎ না করাই উত্তম।
৬২। হাঁচি-কাশি-হাই উঠলে কী করব?
মুখে রুমাল চেপে দেব। প্রত্যেকের কাছে রুমাল বা টিস্যুপেপার থাকা দরকার। রুমাল বা টিস্যুপেপার বের করতে দেরি হলে নিজের শরীরের কাপড় মুখে চেপে দিতে হবে। বেশি সমস্যা মনে হলে লোকের মধ্যে থেকে সরে যেতে হবে। তারপর ভালভাবে মুখ মুছে ফেলতে হবে। রান্না করার সময় এবং সামনে খাবার থাকলে খুব সচেতন হতে হবে।
৬৩। বাথরুমে হাত-মুখ ধোয়ার সময় বা ওজু করার সময় কোন দিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন?
এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন পানি ছিটকে অন্যের গায়ে না লাগে। বালতির মধ্যে থুথু ফেলা যাবে না। থুথু বা কফ ফেললে শব্দ করা যাবে না। বাথরুমের মেঝেতে থুথু বা কফ ফেলে রাখা যাবে না। থুথু বা কফ পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে যেন পরে কারো চোখে না পড়ে। আমি যেভাবে বাথরুম প্রথমে এসে দেখতে পাব তার চেয়ে ভাল অবস্থায় রেখে আসব। টিউবওয়েলে হাত-মুখ ধুতে গেলে টিউবওয়েলের পাশে থুথু বা কফ ফেলা যাবে না। দূরে ফেলতে হবে যেন কারো চোখ না যায়।
৬৪। বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়লে কী করব?
সাধারণভাবে আমরা মাঝে মাঝে কিছু না কিছু সমস্যায় পড়ি। যেমন শব্দ হওয়া, গন্ধ লাগা, গরম বা ঠান্ডা এসব পরিবেশ নিয়ে চলতে হয়। এসবের কারণে বেশি উত্তেজিত হলে নিজেরই ঘুম বা স্বাভাবিক জীবনযাপনে সমস্যা হয়। একটু মানিয়ে নিতে পারলে খুব ভাল।
৬৫। কথা বা কাজের মধ্যে মানুষকে আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করলে কী হয়?
মানুষ বর্তমান পৃথিবীতে খুবই সমস্যায় থাকে। চলতে ফিরতে মানুষের সাথে এমনভাবে কথা বলব, এমন কাজ করব, এমন আচরণ করব যেন অন্য লোকে কষ্ট না পায় বরং মজা পায়। লোকে খুশি হয়। নিজের সামান্য চেষ্টায় যদি মানুষকে ক্ষণিকের জন্য আনন্দ দেয়া যায় তবে সেটা তো খুব ভাল কাজ।
৬৬। দুপুরে বা রাতে কাউকে বিরক্ত করা কি ঠিক কাজ?
দুপুরে বা রাতে মানুষ বিশ্রাম করে। এ সময়টুকু মানুষের একান্ত নিজের। তাছাড়া যখন লোকে নামায পড়ে বা কোন কাজ করে তখন মোবাইল করা, কলিংবেল দেয়া বা অন্য কোনভাবে মানুষকে বিরক্ত করা ঠিক না। কোন লোক কখন কী কাজ করে বা কী অবস্থায় থাকে তা বুঝে যোগাযোগ করতে হয়।
৬৭। কাউকে ঘুম থেকে কীভাবে ডাকব?
মানুষের বিশ্রামের সর্বোচ্চ অবস্থা ঘুম। সাধারণভাবে কেউ ঘুমোলে তাকে ডাকা ঠিক না। তবে বেশি বেলা হয়ে গেলে বা কোন বিশেষ প্রয়োজনে ডাকতে হলে নিচুস্বরে একটু দেরি করে করে ডাকতে হবে। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ডেকে তোলা ঠিক হবে না। এক্ষুণি উঠে আয় এমনভাবে ঘুম থেকে উঠতে বাধ্য করা যাবে না। ঘুমোনোর জন্য একটিমাত্র বালিশ ব্যবহার করা ভাল।
৬৮। দু জন লোক আলাদা হয়ে কথা বলছে সেখানে যাওয়া কি ঠিক হয়?
দু জন লোক কথা বলার সময় যদি বোঝা যায় তারা এমন কোন কথা বলছে সেখানে আমি গেলে তারা হয়ত বিরক্ত হবে তবে সেখানে যাওয়া ঠিক না। তারা হয়ত এমন কোন কথা বলতে পারে যা আমাকে বলবে না। তারা বলতে না চাইলে তা শোনার চেষ্টা করা ঠিক না।
৬৯। কেউ কাজ করলে তখন কথা বলা কি ঠিক?
যখন কোন ব্যক্তি কাজ করছে তখন তার সাথে কথা বলা ঠিক না। যেমন- ডাক্তার যখন প্রেসক্রিপশন লিখছেন, ক্যাশিয়ার টাকা গুনছেন, দোকানদার মালামাল ওজন দিচ্ছেন এমন সময় চুপ থাকা ভাল। তা নাহলে ভুল হতে পারে।
৭০। সম্মানিত ব্যক্তিদের টাকা দিতে হলে কীভাবে দিতে হয়?
সম্মানীত ব্যক্তিদের টাকা দিতে হলে টাকাগুলো ভালভাবে গুনে নিতে হবে। তারপর একটি খামে ভরে টাকাগুলো দিতে হবে। ময়লা, ছেড়া টাকা ইত্যাদি দেয়া ঠিক না।
৭১। ছোট-খাট বিষয়ে বেশি মাথা ঘামানো কি ঠিক?
সব বিষয়ে চিন্তা করা ঠিক না। কেউ হয়ত একটু খারাপ ব্যবহার করল, দশ টাকা দিয়ে জিনিস কিনে বুঝলাম দুই টাকা লোকসান হয়েছে, সবজি কেনার পর বুঝলাম কিছুটা পঁচা আছে, জামাটা একটু লম্বা হয়েছে, এমন সব ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে ভুলে যাওয়া ভাল।
৭২। আবেগ কি সব সময় প্রশ্রয় পাবে?
কাজ করার সময় আইন, সামাজিক রীতিনীতি মেনে কাজ করতে হয়। তবে কোন কোন সময় এমন হয় আনন্দ বা রাগে মানুষ কিছু কাজ করে যেটা আইন বা সামাজিক রীতিনীতির কিছুটা পরিপন্থি। দেশের জন্য কোন শুভ সংবাদ হলে লোকে আনন্দ উল্লাস করল, কোন কারণে রাগ করে হয়ত কর্মীরা কিছু সময় কাজ বন্ধ করে দিল, ছাত্ররা একটি ক্লাশ না করে আনন্দ করল, একজন কোন অনুষ্ঠানে যোগ দিল না, এমন হলে আবেগকে প্রশ্রয় দেয়া ভাল। "আবেগ যেখানে প্রবল যুক্তি সেখানে দুর্বল" এই নীতি মাঝে মাঝে মানতে হয়।
৭৩। সম্মুখ আলোচনায় সমস্যার সমাধান করলে কী সুবিধে হয়?
চলতে ফিরতে বিভিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে। একে অপরের সাথে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। নিজেকে দোষী মনে হতে পারে। এমন সময় দূরে দূরে না থেকে বিষয়টা নিয়ে সরাসরি আলোচনা করলে ভুল বোঝাবুঝির সমাধান হয়। তখন মনে একটি প্রশান্তি আসে।
৭৪। ব্যক্তিগত সমস্যার ফল কি অন্যকে ভোগ করতে দেয়া ঠিক?
মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। রোগ থাকতে পারে, পারিবারিক সমস্যা থাকতে পারে, হয়ত নিজে কোন অন্যায় করেছি, কোন স্থান থেকে বঞ্চিত হয়েছি এসব বিষয় মনে কষ্ট দেয়। কিন্তু এর কারণে যাদের সাথে সারা দিন চলাফেরা করি তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা ঠিক না। প্রয়োজনে নিজে একা সন্ন্যাসী হয়ে যাব, বাড়িতে বন্দি থাকব। কিন্তু পরিবার, রিক্সাওয়ালা, দোকানদার, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী এদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা ঠিক না।
৭৫। কোন বিষয় না জানা থাকলে সে বিষয়ে কথা বলা কি ঠিক?
কোন বিষয়ে আলোচনা চলছে যেটা আমি জানি না সেখানে চুপ করে থাকব, কথা বলব না। একটি লোক নিয়ে আলোচনা চলছে যার সম্পর্কে আমি জানি না এমন হলে কথা বলা ঠিক না।
৭৬। তোমরা কোন বিষয়ে আলোচনা করছ এমন সময় কেউ উপস্থিত হলে কী করবে?
যদি সম্ভব হয় যে উপস্থিত হল তাকে বিষয়টা সম্পর্কে একটু ধারণা দেব ও তাকেও আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেব।
৭৭। লেখকদের নাম কীভাবে বলব?
লেখকগণ সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁদের নাম সম্মানের সাথে বলতে হয়। জনাব, স্যার ইত্যাদি তাঁদের নামের সাথে সংযুক্ত করে বলা ভাল। বিশেষ করে ছাত্ররা যে পাঠ্যবই পড়ে তার অধিকাংশই শিক্ষকদের লেখা। এজন্য ইব্রাহিম স্যারের বই, ইকরামুল কবির স্যারের বই এভাবে বলা ভাল। তাছাড়া হেডস্যার, প্রিন্সিপ্যালস্যার, মেম্বারসাহেব, উকিলসাহেব এভাবে বলা ভাল।
৭৮। কেউ কোন ভুল করলে তা বলা কি ঠিক হবে?
এটা সম্পর্কের উপর বেশি নির্ভর করে। তবে বলা যাবে। কিন্তু এমনভাবে বলতে হবে যেন তিনি কষ্ট না পান।
৭৯। নিজের অন্যায়ে কে লজ্জিত হবে?
নিজের অন্যায়ে নিজে লজ্জিত হওয়া উচিত। কিন্তু আমরা বড় বড় অন্যায় করে গর্বের সাথে ঘুরে বেড়াই। মনে করি আমার অপরাধের কথা কেউ জানে না। কেউ যদি আমার অন্যায়ের কথা বলে তবে রেগে যায়। দোষ করছি সেটা কোন ব্যাপার না। তবে কেউ সেটা বললে লজ্জা পায়, কষ্ট পায়।
৮০। উৎসাহ নিয়ে কেউ কোন কাজ করলে তাকে কি বাধা দেয়া ঠিক হয়?
যদি বিশেষ ক্ষতি না হয় তবে উৎসাহ নিয়ে কেউ কোন কাজ করলে তাকে কাজটি করতে দেয়া দরকার। এতে হয়ত খুব ভাল কোন ফল আসবে না কিন্তু তাকে থামানো ঠিক না।
৮১। কেউ কিছু বলতে চাইলে তাকে কি থামিয়ে দেয়া ঠিক হয়?
সাধারণভাবে বলতে দেয়া ভাল। তার সমস্ত কথা না শুনলে হয়ত পরে সমস্যা হতে পারে। দোকানদার জিনিস বিক্রি করার সময় বলে এটা এমনভাবে ব্যবহার করবেন। এমন সময় আমরা বলি এ জিনিস অনেকদিন যাবত ব্যবহার করছি। আপনাকে বলতে হবে না। কিন্তু কে ব্যবহার করেছে আর কে ব্যবহার করে নি তা দোকানদার বুঝবে কীভাবে? একজন এমন বললে দোকানদার অন্য ক্রেতাকে কিছু বলতে চায় না ফলে অন্য ক্রেতাদের সমস্যা হয়। আমরা যদি জেনেও থাকি তবু তার কাছ থেকে নতুন কিছু জানার থাকতে পারে। এমনভাবে কোন লোক কোন কথা বলতে চাইলে তা যদি জানাও থাকে তবুও বাধা দেয়া ঠিক না। একটু ধৈর্য ধরে শোনা ভাল।
৮২। নিজের দোষ কি লুকানো যায়?
নিজের দোষ লুকানো যায় না। সত্য কখনও চাপা থাকে না। মানুষ কে কেমন তা একদিন না একদিন সকলে বুঝতে পারে। নিজের দোষ লুকানোর চেষ্টা করে কেউ সফল হতে পারে না। হয়ত সরাসরি কেউ কিছু বলে না। কিন্তু তার মানে এই না যে কে কেমন মানুষ তা লোকে জানে না। মিথ্যা বলে কেউ হয়ত একটি ঘটনা থেকে রেহাই পেতে পারে তার মানে এই না যে অন্য লোক বুঝল না যে, সে মিথ্যা কথা বলছে।
৮৩। কেউ কোন ভুল কাজ করে যদি নিজেই অনুতপ্ত হয় তখন কী করবে?
মানুষ মাত্রই ভুল করে। ভুল বা অন্যায় করার পর যদি বোঝা যায় ঐ ব্যক্তি নিজেই অনুতপ্ত তবে তাকে কিছু বলা ঠিক না। কারণ নিজের ভুলের শাস্তি সে নিজেই পেয়েছে।
৮৪। কেউ যদি কোন ঘটনা বলতে না চায় তবে কি তাকে বাধ্য করা ঠিক?
কাউকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করার পর যদি বোঝা যায় যে, লোকটা বিষয়টি বলতে চাচ্ছে না তবে তাকে বারবার জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবে না। যেমন জিজ্ঞাসা করলাম কাল বিকেলে কোথায় গিয়েছিলেন? লোকটা হয়ত প্রশ্নটা শুনতে পায় নি ভেবে আর একবার প্রশ্ন করলাম। যদি বোঝা যায় সে ইচ্ছে করে উত্তর দেচ্ছে না তবে তাকে আর প্রশ্ন করা ঠিক না। হয়ত কোন সমস্যা আছে, এমন কোন লোক এখানে উপস্থিত আছে যার জন্য লোকটা এখন উত্তর দিতে চাচ্ছে না। আর পূর্ব থেকেই যদি বোঝা যায় লোকটি বলতে চাইবে না তবে তার কাছে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া ঠিক না।
৮৫। নিজে বেশি কথা বলব নাকি অন্যকে বেশি কথা বলতে দেব?
অন্যকে বেশি কথা বলার সুযোগ দেব। তবে নিজের কোন বিশেষ জরুরি কথা থাকলে তা অবশ্যই সময় নিয়ে বলতে হবে।
৮৬। নিজের সমস্যার কথা কি অন্যকে জানানো ঠিক?
মানুষ একে অপরের সাহায্য নিয়ে চলে। কিন্তু নিজের সমস্যার কথা সব সময় অন্যকে বলা ঠিক না। প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ সমস্যা সামলাতে ব্যস্ত থাকে। নিজের সমাধান নিজে করা উত্তম। তবে বিশেষ সমস্যা হলে অন্যের সাহায্য নিতে হবে।
৮৭। কেউ কিছু দেখাতে না চাইলে তাকে কি জোর করা ঠিক হয়?
কেউ যদি কিছু দেখাতে না চায় তবে তাকে জোর করে দেখতে চাওয়া ঠিক না বা জিজ্ঞাসা করা ঠিক না। যেমন তোর পকেটে কী আছে? কী লিখছিস? এসব বিষয়ে না জিজ্ঞাসা করা ভাল।
৮৮। কাউকে কি এমন কিছু বলা ঠিক যাতে সে ছোট হয়?
মানুষকে ছোট করে কোন কথা বলা ঠিক না। কোন মানুষ ভুল করলে তাকে সেটা বলা যায় বা শেখানো যায়। কিন্তু, "এটা কি ভাল লোকের মত কাজ হলো? তুই নাকি ডিগ্রি পাস?" এমন বলা যাবে না।
৮৯। কারো শরীরে কোন দোষ দেখলে সে বিষয়ে প্রশ্ন করা কি ঠিক হয়?
মানুষের শরীরে সমস্যা থাকতেই পারে। একটি লোকের হয়ত এটা পায়ে সমস্যা আছে খুঁড়িয়ে হাঁটে, হাতে একটি আঙ্গুল কাটা আছে, মুখে একটি কাটার দাগ আছে। এসব দেখলে ঐ দিকে তাকানো বা প্রশ্ন করা ঠিক না। লোকটা লজ্জা পেতে পারে। তার পুরনো ঘটনা মনে হতে পারে। সে কষ্ট পেতে পারে। কারো কোন কষ্টের বা দুঃখের প্রসঙ্গ আলোচনা না করাই ভাল।
৯০। ফাঁকিবাজি করার মানসিকতা কি ঠিক?
কাজ যথাসাধ্য ভালোভাবে করা উচিত। কাজ করতে যেয়ে ভুল হতে পারে কিন্তু চেষ্টা বা আন্তরিকতার ঘাটতি থাকা ঠিক না। আমরা বসে আছি মাঝে একটি কাজ করে আবার বসে থাকি। কিন্তু ঐ কাজটি মন দিয়ে বা সুন্দর করে করার চেষ্টা করি না। অন্যের উপর চাপিয়ে দিয়ে বা দায়সারাভাবে কাজ করে বসে থাকি। এটা কখনও ঠিক না। ছোট, বড়, যে ধরণের কাজ হোক না কেন তা ভালভাবে করার চেষ্টা করতে হবে।
৯১। বেশি বেশি কাজ করব নাকি ভালো করে অল্প কাজ করব?
কোন কাজ করলে সেটা ভালোভাবে করা উত্তম। দায়সারাভাবে কাজ করা ঠিক না। বিশেষ করে সৃজনশীল কাজ অবশ্যই ভালোভাবে করতে হবে। অনেক সময় নিয়ে অনেকদিন পর একটি কাজ করব তা যেন ভাল হয়।
৯২। তর্ক করা কি ঠিক?
কোন বিষয়ে তর্ক করা ঠিক না। নিজে দোষ স্বীকার করে সমাধান করা ভাল। যেমন আমি বললাম শিমুলের বড় ভাইয়ের নাম পলাশ। অন্যজন বলল তুই তিতাসের বড় ভাইয়ের নাম পলাশ বলছিস কেন? তখন বলব আমার হয়ত বলতে ভুল হয়েছে। শিমুলের বড় ভাইয়ের নাম পলাশ।
৯৩। কোন কাজ করতে গেলে বাধা পেলে কী করব?
কাজ করতে গেলে সমস্যা হবে এটা স্বাভাবিক। যদি তেমন গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব পাই তবে অবশ্যই সেটা করব। এতে যেসব সমস্যা হয় তা মাথা পেতে কাজটি শেষ করাই উত্তম। কাজ শেষ করতে না পারা ব্যর্থতা।
৯৪। নিজে কোন ভুল করলে সেটা কি নিজে বলা যায়?
মানুষ মাত্রই ভুল করে। কাজ করতে গেলে ভুল হতে পারে। ভুল হবার পর তা যদি চেপে রাখা হয় তবে সেটা হয় অন্যায়। এটা জানাজানি হলে লোকে খারাপ বলে। অন্যরা জানার আগে যদি নিজেই সেটা বলা যায় তবে বিষয়টা হালকা হয়ে যায়। এ জন্য নিজে ভুল করলে সংশ্লিষ্টদের সেটা বলে দেয়া ভাল।
৯৫। টাকা নেয়ার সময় কি গুনে নেয়া দরকার?
কোন লোকের থেকে টাকা নেয়ার সময় সেটা তার সামনে গুনে নেয়া ভাল। আমি যখন কাউকে টাকা দেব তখন গুনে দেব যেন কম দেয়া না হয়। আর যখন কারো থেকে টাকা নেব তখন গুনে নেব যেন বেশি না নেয়া হয়। অনেক ভুল বোঝাবুঝির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৯৬। কেউ কোন ভুল করলে তাকে কি আগেই শাস্তি দেয়া যায়?
মানুষ বিভিন্ন কারণে ভুল বা অন্যায় করতে পারে। ভুল ইচ্ছাকৃত হতে পারে আবার অনিচ্ছাকৃত হতে পারে। একজন বাড়ির বাইরে যেয়ে অনেক দেরি করে ফিরল। বাড়িতে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বকাঝকা করা ঠিক না। তার দেরি হবার কারণটা ভাল মুখে তার কাছে আগে জানতে হবে। হয়ত যুক্তিসঙ্গত কারণে সে দেরি করেছে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তারপর বকাঝকা করা যায়। কিন্তু প্রথমে বকাঝকা করা ঠিক না। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ তাকে দিতে হবে। প্রথমে বকাঝকা করলে যদি পরে সে যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা দেয় তবে যে বকাঝকা করে সে লজ্জা পায়। যাকে বকাঝকা করা হল সে খুব কষ্ট পায়। ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।
৯৭। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করল তুমি উত্তর দিতে চাও না, কী করবে?
লোকে প্রশ্ন করলে সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব হয় না। এমন কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে চুপ করে থাকব। এতে হয়ত লোকটা বুঝে যাবে। তারপরও জিজ্ঞাসা করলে বিনয়ের সাথে বলব আমি বিষয়টা বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু আমরা অনেক সময় বলি, "আপনার কী দরকার?" এটা বলা ঠিক না।
৯৮। লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পড়লে কী করবে?
কোনো সময় এমন কোন ঘটনা ঘটতে পারে বা এমন কোন কাজ করতে পারি যার জন্য লজ্জায় পড়তে হয়। অন্যরা হাসি-তামাশা করতে পারে। এমন সময় নিজেও তাদের সাথে হেসে প্রসঙ্গটা হালকা করা যায়। বলা যেতে পারে আমি কিন্তু লজ্জা পাচ্ছি অথবা অন্যরা যা বলছে নিজেও তাদের সাথে যোগ দিয়ে বললে বিষয়টা হালকা হয়ে যায়। রাগ করা বা ওখান থেকে চলে যাওয়া ঠিক না।
৯৯। উপযাচক হয়ে দায়িত্ব নেয়া কি ঠিক হয়?
মানুষের উপকার করতে হবে। তবে সব সময় নিজে আগবাড়িয়ে দায়িত্ব নিতে যাওয়া ঠিক না। যেমন কোন বন্ধুর ভাইয়ের বিবাহ তারা যদি যেতে বলে তবে সেখানে যাব, যা করতে বলে তা ভালভাবে করব। কিন্তু তারা কিছু বলল না নিজে যেয়ে সব কর্মপরিকল্পনা করে কাজ শুরু করলাম এটা ঠিক না। সমস্যা মনে করলে এটা বলা যায় "যদি প্রয়োজন হয় আমাদের বলবেন"। কিন্তু সব ক্ষেত্রে উপযাচক হয়ে কাজ করা ঠিক না।
১০০। আত্মতৃপ্তি নিয়ে কাজ করলে কি হয়?
কাজ করার সময় এমনভাবে করতে হবে যেন নিজের কাছে ভালো লাগে। অন্যরা কে কি ভাবলো তা দেখার দরকার নেই। এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন পরে নিজের কাজের জন্য নিজের কাছে অপরাধী মনে না হয়। কাজটা করে যেন নিজের কাছে ভালো লাগে।
No comments:
Post a Comment