আফিল জুট মিলস লিমিটেড বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত পাটশিল্প প্রতিষ্ঠান, যা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পাটশিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস: আফিল জুট মিলস লিমিটেড ১৯৬৫ সালে মরহুম এম. আফিল উদ্দিন আহমেদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি পাটশিল্পে সুনামের সাথে কাজ করে আসছে। পরবর্তীতে, প্রতিষ্ঠাতার অসুস্থতার কারণে মিলের দায়িত্ব বর্তমান ব্যবস্থাপনার হাতে হস্তান্তরিত হয় ।
অবস্থান ও কর্মসংস্থান: প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার আটরা শিল্প এলাকায় অবস্থিত। এখানে প্রায় ১,৩২৬ জন শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন ।
উৎপাদন ও রপ্তানি: আফিল জুট মিলস লিমিটেড একটি শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান। ২০১০ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব মিল থেকে পাটের সুতা উৎপাদন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে আসছে। তবে, ২০২১ সালে একটি প্রতারণার ঘটনার কারণে প্রতিষ্ঠানটি ১৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়, যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে ।
সামাজিক অবদান: প্রতিষ্ঠানটি শুধুমাত্র শিল্প উৎপাদনেই নয়, সামাজিক উন্নয়নেও অবদান রেখেছে। ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত আফিল জুট মিলস জামে মসজিদ স্থানীয় ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করছে ।
সারাংশ
আফিল জুট মিলস লিমিটেড বাংলাদেশের পাটশিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে অবদান রেখে চলেছে, যদিও সাম্প্রতিক কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।
আফিল জুট মিলস লিমিটেডের বর্তমান অবস্থা (২০২৫)
বর্তমানে আফিল জুট মিলস লিমিটেড একটি সীমিত পরিসরে পরিচালিত এবং কিছু সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নিচে এর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হলো:
১. আর্থিক সংকট: ২০২১ সালে একটি প্রতারণামূলক রপ্তানি চুক্তির মাধ্যমে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয় মিলটির।
এই ঘটনার পর ব্যাংক ঋণ এবং বিনিয়োগ সমস্যায় পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। আর্থিক ক্ষতি এখনো পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা যায়নি।
২. উৎপাদন কার্যক্রম: পূর্বে সম্পূর্ণ রপ্তানিমুখী ছিল, তবে এখন উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। মিলটি সীমিত সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু মেশিনারিজ পুরাতন ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অচল অবস্থায় আছে।
৩. শ্রমিক ও কর্মসংস্থান: আগে যেখানে প্রায় ১৩০০+ শ্রমিক কাজ করতেন, এখন সেই সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। অনেক শ্রমিক বেতন ভাতা নিয়ে অসন্তুষ্ট।
৪. প্রশাসনিক ও আইনি জটিলতা: ২০২১ সালের প্রতারণা সংক্রান্ত মামলা এখনো তদন্তাধীন। এই ঘটনার কারণে কোম্পানির ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
৫. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: ম্যানেজমেন্ট পুনরায় মিলকে সচল করার চেষ্টা করছে। নতুন বিনিয়োগ খোঁজা হচ্ছে এবং উৎপাদন ব্যবস্থায় আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
No comments:
Post a Comment